শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নিয়ে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় দানা : Cyclone DANA update
ঘূর্ণিঝড় “দানা” বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়, যা বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশা উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। ঘূর্ণিঝড়টি ইতোমধ্যে উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে, এবং এর ফলে ওড়িশার ধামরা এবং ভিতরকণিকা অঞ্চলে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। এই ঝড়টি ভারী বৃষ্টি, প্রবল বাতাস এবং উঁচু জলোচ্ছ্বাসের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে। পশ্চিমবঙ্গের ৯টি জেলায় এই পরিস্থিতির জন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে, এবং সেখানে বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কালীপূজার সময় ঘনিয়ে আসায় দক্ষিণবঙ্গে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। পুরীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন স্থানগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, এবং বহু ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি, স্থানীয় প্রশাসন মাছ ধরার নৌকাগুলোকে সমুদ্র থেকে ফিরিয়ে এনেছে এবং মানুষকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
আবহাওয়া দপ্তরের মতে, ঘূর্ণিঝড়টি আরও শক্তিশালী হয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার উপকূলে আঘাত হানতে পারে। প্রশাসন ঝড় মোকাবিলায় বিশেষ কন্ট্রোল রুম খুলেছে এবং উদ্ধারকাজে এনডিআরএফ দল মোতায়েন করা হয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে সতর্ক থাকতে এবং প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ করা হয়েছে
ঘূর্ণিঝড় ডানা: ২৪ অক্টোবর ২০২৪ আপডেট
ঘূর্ণিঝড় ডানা: পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী অঞ্চলে আছড়ে পড়ল, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা
২৪ অক্টোবর ২০২৪, পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলোতে আছড়ে পড়ল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ডানা। আবহাওয়া দফতরের মতে, ঘূর্ণিঝড়টি বঙ্গোপসাগরের ওপর থেকে শক্তি সঞ্চয় করে উপকূলের দিকে এগিয়ে আসে এবং সকাল ১০টা নাগাদ দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুর অঞ্চলে প্রথম আঘাত হানে। এই অঞ্চলে প্রবল বেগে বাতাস ও বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে, এবং এর ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি ও গতিপথ:
ঘূর্ণিঝড় ডানা আঘাত হানার সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার, যা কিছু এলাকায় ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিমবঙ্গের উপকূল ছাড়িয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোচ্ছে এবং তার প্রভাবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের আরও কিছু অঞ্চলে প্রবল ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা:
প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে বড় ধরনের গাছপালা উপড়ে পড়েছে, বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়েছে। সুন্দরবন অঞ্চলের কিছু এলাকায় নদী বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে। নিকটবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যার ফলে বহু মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘা, মন্দারমণি ও শংকরপুরে সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা বেড়ে গেছে এবং সেখানেও তীব্র বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
সরকারের প্রস্তুতি ও উদ্ধার কার্যক্রম:
পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং কেন্দ্রীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এনডিআরএফ (National Disaster Response Force) ও রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা দলকে বিভিন্ন বিপদগ্রস্ত এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫ লক্ষাধিক মানুষকে উপকূলবর্তী অঞ্চল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমস্ত পরিস্থিতির উপর নজরদারি রাখছেন এবং তিনি জনসাধারণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
বাতিল পরিষেবা:
ঘূর্ণিঝড় ডানার কারণে পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু অঞ্চলে ট্রেন ও বিমান পরিষেবা বাতিল করা হয়েছে। কলকাতা বিমানবন্দরেও কিছু ফ্লাইট বাতিল বা দেরি করে চালানো হচ্ছে। সমুদ্রবন্দরগুলোতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং সমস্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়ার পরবর্তী পূর্বাভাস:
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় ঝড়ের প্রভাব আরও বাড়তে পারে এবং সারা রাজ্যে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, এবং কলকাতা অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
পরামর্শ ও সতর্কতা:
সরকার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনগণকে সতর্ক থাকতে এবং অনুরোধ করা হয়েছে যাতে কেউ অপ্রয়োজনীয়ভাবে বাড়ির বাইরে না যান। উপকূলবর্তী অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমের আপডেট:
সরকারি ও বেসরকারি ত্রাণ সংস্থাগুলি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে ত্রাণ বিতরণের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। খাদ্য, পানি, ওষুধ ও অন্যান্য জরুরি সামগ্রী সরবরাহের জন্য বিশেষ ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। পরিস্থিতির ওপর নজর রেখে রাজ্য সরকার ও প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।