নারকীয় ধর্ষণ ও খুনের মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রাইকেই দোষী সাব্যস্ত করল আদালত

দীর্ঘ ১৬২ দিনের অপেক্ষার পরে অবশেষে ঘোষণা হল আরজি কর মামলার রায়। নারকীয় ধর্ষণ ও খুনের মূল অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রাইকেই দোষী সাব্যস্ত করল আদালত। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (ধর্ষণের পর মৃত্যু) এবং ১০৩ (১) (খুন) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ারকে। সোমবার হবে সাজা ঘোষণা। শাস্তি হতে পারে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন।
কোন কোন ধারায় দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয়
ভারতীয় ন্যায় সংহিতা অনুসারে, 64 ধারায় (ধর্ষণ), 66 ধারা (ধর্ষণের সময় এমন আঘাত করা, যার জেরে মৃত্য়ু হতে পারে), 103 (1) (খুন) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে।
দোষী সাব্যস্ত হতেই কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে চিৎকার করে ওঠে সঞ্জয়। বলে, ” আমি কিছু করিনি। যারা করেছে তাদের কেন ছাড়া হল। আমার কোনও দোষ নেই। সবাই মিলে করেছে।” তার আরও দাবি, “আমি পাপ করিনি। আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা আছে। রুদ্রাক্ষের মালা নিয়ে এই অপরাধ করব!” সঞ্জয়ের যুক্তি,” আমি যদি এই অপরাধ করতাম তাহলে রুদ্রাক্ষের মালা ছিঁড়ে পড়ে যেত। স্যার, আপনি বুঝতে পারছেন নিশ্চয়ই যে আমাকে পুরো ফাঁসানো হচ্ছে।” পুলিশের এক কর্তার দিকেও আঙুল তোলে সে। কাঠগড়ায় কথা বলতে বলতে উত্তেজিত হয়ে পড়ে ধর্ষণ-খুনে দোষী সাব্যস্ত হওয়া সিভিক ভলান্টিয়ার। তাকে শান্ত হতে বলেন তার আইনজীবী। এর মাঝেই সঞ্জয়কে থামিয়ে দিয়ে বিচারক বলেন, “সব সাক্ষীকে জেরা করে আপনার বিরুদ্ধে যা প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে, তার ভিত্তিতে আপনাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
আপনার শাস্তি আপনাকে পেতে হবে। কী শাস্তি হবে, সেটা সোমবার জানানো হবে। সোমবার আপনার কথাও শুনব।” এরপর সঞ্জয় হাতজোর করে বিচারককে বলে, “আপনি তো স্যার দোষী সাব্যস্ত করেই দিলেন। আমি গরিব। আমি এই কাজ করিনি। যারা করেছে তারা কেন বাইরে রয়েছে? আমি একজন আইপিএসকেও বলছি।” এদিন কাঠগড়া থেকে নামতে চায়নি সঞ্জয়। আদালত থেকে বের করার সময় সে বারবার বলতে থাকে, “আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।” এ প্রসঙ্গে সিবিআইয়ের আইনজীবী পার্থসারথী দত্ত বলেন, “সঞ্জয়ের কথার কোনও ভিত্তি নেই। তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।”
কিন্তু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, সঞ্জয় রায় কি একাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে? নাকি সঞ্জয়ের সঙ্গে ছিল আরও কেউ ? আরও কেউ এই ঘটনায় যুক্ত কিনা তা এখনও প্রমাণিত নয়, তবে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ প্রমাণিত। তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিচারক।